প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীদের অপেক্ষার অবসান হতে যাচ্ছে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের ৩২ হাজার ৫৭৭ টি পদে নিয়োগ পরীক্ষার তারিখ প্রায় চূড়ান্ত। আগামী ১৫ ডিসেম্বর এর মধ্যে এ পদের লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হতে পারে বলে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাকির হোসেন। ইতিমধ্যে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য সব প্রস্তুতি প্রায় শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।
প্রাথমিকের ইতিহাসে এটিই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি। গত বছরের ২৫ অক্টোবর অনলাইনে আবেদন শুরু হয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে। আবেদন প্রক্রিয়া শেষ হয় গত বছরের ২৪ নভেম্বর রাতে। এর পরেই ৭২ ঘন্টা সময় ছিল পেমেন্ট করার জন্য। পেমেন্ট শেষে ১৩ লাখ ৯ হাজার ৪৬১ জন প্রার্থী আবেদন করেছেন। এরমধ্য প্রাক-প্রাথমিকে ২৫ হাজার ৬৩০ জন এবং প্রাথমিক বিদ্যালয় এর শূন্যপদে ৬ হাজার ৯৪৭ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে।
এ পদের পরীক্ষার আয়োজন এর সব প্রস্তুতি শেষ করেও করোনা ভাইরাসের কারণে এতদিন নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি। গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে করোনা কমতে শুরু করায় বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর চাকরির নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া শুরু করে। কিন্তু প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকের নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়ার তারিখ ঘোষণা করা হচ্ছিল না। ফলে এটি নিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের মনে ছিল নানান কৌতুহল।
কবে হতে পারে এ পদের নিয়োগ পরীক্ষা-
এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাকির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন মহামারী করোনাভাইরাস ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে সহকারি শিক্ষক পদের নিয়োগ পরীক্ষা এতদিন নেওয়া সম্ভব হয়নি। বর্তমানে করোনা অনেকটা কমে এসেছে। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও মন্ত্রণালয় চাকরির নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া শুরু করেছে। আমরাও সহকারী শিক্ষক পদের নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়ার জন্য সব প্রস্তুতি প্রায় শেষ করেছি। আশা করছি আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হবে। ইতিমধ্য নিয়োগ সংক্রান্ত টেকনিক্যাল কাজ অনেকটা শেষ হয়েছে।
সহকারি শিক্ষক পদে ৩০ বছর পূর্ণ হওয়া প্রার্থীরাও আবেদনের সুযোগ পেয়েছেন। করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার কারণে গত বছরের ২৫ মার্চ যাদের ৩০ বছর পূর্ণ হয়েছে সরকারি চাকরিতে তাদের আবেদনের সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এনিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ওই প্রজ্ঞাপনের আলোকে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। অধিদপ্তর বিজ্ঞপ্তিতে বলেছিল, গত বছরের ২০ অক্টোবরে বয়স সর্বনিম্ন ২১ বছর এবং ২৫ মার্চ ২০২০ তারিখে প্রার্থীর বয়স সর্বোচ্চ ৩০ বছর হতে হবে। তবে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও শারীরিক প্রতিবন্ধী আবেদনকারীর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা ২৫ মার্চে ৩২ বছর ছিল।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরর (ডিপিই) সহকারী পরিচালক (নিয়োগ) হিসেবে কর্মরত সিনিয়র সহকারী সচিব আতিক এস বি সাত্তার বলেন, এ পদে মোট আবেদন পড়েছে ১৩ লাখ ৯ হাজার ৪৬১ টি।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আবেদন পড়েছে ঢাকা বিভাগে ২ লাখ ৪০ হাজার ৬১৯ টি। এরপর রাজশাহীতে ২ লাখ ১০ হাজার ৪৩০ টি, খুলনায় ১ লাখ ৭৮ হাজার ৮০৩ টি, ময়মনসিংহে ১ লাখ ১২ হাজার ২৫৬ টি, চট্রগ্রামে ১ লাখ ৯৯ হাজার ২৩৬ টি, বরিশালে ১ লাখ ৯ হাজার ৩৪৪ টি, সিলেটে ৬২ হাজার ৬০৭ টি এবং রংপুর বিভাগে ১ লাখ ৯৬ হাজার ১৬৬ টি।
সহকারী শিক্ষকের মোট শূণ্যপদ ও এর বিপরীতে জমা পড়া আবেদনপত্রের হিসাব করলে দাঁড়ায়, একটী পদের জন্য চাকরীপ্রত্যাশী ৪০ জন প্রার্থী পরীক্ষায় অংশ নেবেন।
সোর্সঃ প্রথম আলো