জাতীয় শোক দিবস অনুচ্ছেদ রচনা। জাতীয় শোক দিবস কে কেন্দ্র করে দেশে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়ে থাকে। তার মধ্য অনেক সময় রচনা প্রতিযোগিতা হয়ে থাকে। তাদের বিষয় বিবেচনা করে আমাদের আজকের পোস্টে জাতীয় শোক দিবসের কবিতা উপস্থাপন করা হয়েছে। আশা করি আপনাদের কাজে লাগবে। দেরি না করে এখনি আমাদের পোস্ট থেকে সংগ্রহ করুন জাতীয় শোক দিবসের অনুচ্ছেদ রচনা।
জাতীয় শোক দিবস অনুচ্ছেদ রচনা
ভূমিকা :
১৫ ই আগস্ট জাতীয় শােক দিবস। এই দিন বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করে। দিনটি একদিকে যেমন গভীর শােকের অন্যদিকে বাঙালি জাতির বিরুদ্ধে সমস্ত ষড়যন্ত্রকে মােকাবিলা করার দৃঢ় শপথের।
বঙ্গবন্ধু ও সােনার বাংলা :
১৯৭১ সালে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে এদেশের আপামর জনগণ যে মরণপণ প্রতিরােধ গড়ে
তােলে তাতে পাকিস্তানি বাহিনী পরাজিত হতে বাধ্য হয়। বঙ্গবন্ধু নিজের জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন । তারই বলিষ্ঠ নেতৃত্বে পাকিস্তানি শাসক-শােষকের সমস্ত ষড়যন্ত্রকে নস্যাৎ করে বাঙালি অর্জন করে প্রিয় স্বাধীনতা। স্বাধীনতা অর্জিত হওয়ায় বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান কারাগার থেকে বেরিয়ে স্বদেশের মাটিতে পা ফেলে অশ্রু ভেজা চোখে সােনার বাংলা গড়ার যে দৃপ্ত শপথ নেন তাতে দেশি-বিদেশি পরাজিত শক্তি আবারও চক্রান্তে মেতে ওঠে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কোনােভাবেই ক্ষুধা-দারিদ্রমুক্ত অসাম্প্রদায়িক সােনার বাংলা যাতে গড়তে না পারে সেইজন্য শত্রুরা অতি সংগােপনে ষড়যন্ত্রের জাল বুনতে থাকে ।
ষড়যন্ত্রের নীল নকশা :
সদ্যস্বাধীন দেশে নানাবিধ সমস্যা যখন আবর্তিত হচ্ছিল তখন বঙ্গবন্ধু তাঁর অপরিমেয় দুরদর্শিতায় তা
মােকাবিলা করতে সমর্থ হয়েছিলেন। অন্যদিকে তাঁর উদার মানসিকতা আর মানুষের প্রতি অবিচল বিশ্বাসের সুযােগকে শত্রুরা হাড়ে হাড়ে কাজে লাগিয়েছিল। এক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি এবং কিছু উদ্ৰান্ত সেনাসদস্য বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পরিকল্পনা সহজেই করতে পেরেছিল। আর এ ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে দূর থেকে মদদ দিয়েছিল পাকিস্তানের সমমনা রাষ্ট্র প্রধানেরা।
সেই নির্মম হত্যাকাণ্ড :
১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে অতর্কিতে আক্রমণ
চালায় কিছু বিপথগামী সেনাসদস্য। ঘাতকের নির্মম বুলেটের আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত হয় বঙ্গবন্ধুর দেহ, বঙ্গবন্ধুর প্রিয় সহধর্মিনী ফজিলাতুন্নেছাসহ পুত্র-পুত্রবধুরাও ঘাতকের বুলেট থেকে রেহাই পায়নি। ঘাতকেরা শুধু এ ঘৃণ্য হত্যাকাণ্ড চালিয়ে ক্ষান্ত হয়নি বরং বঙ্গবন্ধুর অতি নিকট আত্মীয়-স্বজনকেও হত্যা করে। সবচেয়ে নিষ্ঠুরতম কাণ্ডটি ঘটায় বঙ্গবন্ধুর ছােটো ছেলে শেখ রাসেলকে হত্যা করে। এ ঘৃণ্যতম হত্যাকাণ্ড থেকে বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা দেশের বাইরে থাকায় বেঁচে যায় । কিন্তু এ মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের রেশ বাঙালিকে বহন করতে হবে অনন্তকাল।
শােক দিবসের আয়ােজন :
জাতি অত্যন্ত শােকাবহ পরিবেশে এ দিনটি উদযাপন করে । এ দিনে দেশের বিভিন্নস্থানে বঙ্গবন্ধুর উপর আলােচনা সভা, সেমিনারের আয়ােজন করা হয়। সরকারিভাবে এ দিনটি ছুটি ঘােষণা করা হয় । এ দিনে বঙ্গবন্ধুর আদর্শানুসারীরা কালাে ব্যাজ ধারণ করে। দেশের বিভিন্নস্থানে মিলাদ মাহফিল ও দোয়ার আয়ােজন করা হয় । মসজিদ, মন্দির ও গির্জায় প্রার্থনা করা হয়। এছাড়াও গােপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করা হয় । তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া করা হয়। এ দিবসকে উপলক্ষ্য করে গরিব ও দুস্থ মানুষের মধ্যে কাঙালিভােজের ব্যবস্থা করা হয়। বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনসহ অন্যান্য টেলিভিশন চ্যানেলগুলাে এ উপলক্ষ্যে বিশেষ অনুষ্ঠানমালার আয়ােজন করে।
উপসংহার :
জাতির স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের অবদানকে জাতি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে। তাঁর হত্যাকারীদের বিচার ইতােপূর্বে সম্পন্ন হলেও আরও কয়েকজন বিদেশে পালিয়ে আছে। তাদের দেশে ফিরিয়ে এনে শাস্তি কার্যকর করা হলে বঙ্গবন্ধুর আত্মা শান্তি পাবে- আমরা কিছুটা হলেও কলঙ্কমুক্ত হব ।
দেখুনঃ
বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনের শুভেচ্ছা স্ট্যাটাস, উক্তি, ছন্দ, বাণী, কবিতা এবং ক্যাপশন
বঙ্গবন্ধুর জীবনী অনুচ্ছেদ রচনা | ছোটদের বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচনা
বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনের শুভেচ্ছা স্ট্যাটাস, উক্তি, ছন্দ, বাণী, কবিতা এবং ক্যাপশন
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এর ঘটনাবলি
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর জীবনী